আমিরাতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার এখন হুমকির মুখে। করোনা মহামারির পরবর্তী সময়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিত্যনতুন প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করে আশার আলো জ্বালিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ভিসানীতি কাল হয়ে দাঁড়ায় প্রবাসীদের জন্য। নতুন চালু হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রমিক আনতে পারছে না দেশ থেকে। শুধুই উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেট ধারীদের জন্য ভিসা খোলা রেখেছে দেশটি।
বিশ্বের ১৭৬টি দেশে মোট বাংলাদেশি প্রবাসীর সংখ্যা প্রায় এক কোটি ৪৯ লক্ষের অধিক। এদের অধিকাংশই কাজ করছেন সৌদি আরব, আমিরাত, ওমান, কাতার, মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশগুলোতে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য মতে, দক্ষ শ্রমিক ভিসা ও ভিজিট ভিসার সুবিধা নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত আমিরাতে বাংলাদেশি কর্মী এসেছেন ৪২ হাজার ৬২৩ জন। গত বছর যে সংখ্যা ছিল এক লাখ এক হাজার ৭৭৫ জন। অর্থ্যাৎ এই সংখ্যা গতবছরের তুলনায় অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।
২০১২ সালের আগস্ট মাস থেকে শ্রম ভিসা বন্ধ ঘোষণা করেছিল আমিরাত সরকার। তবে গৃহকর্মী ও উচ্চশিক্ষা সার্টিফিকেট দিয়ে কর্মীদের ভিসা চালু রাখা হয় ৷ পরে করোনা পরবর্তী সময় কয়েক বছরে ভ্রমণ ভিসা নিয়ে আমিরাতে এসে কাজের ভিসায় রূপান্তরিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন প্রায় তিন লাখ বাংলাদেশি। এরমধ্যে ২০২৩ সালের প্রথম ৬ মাসে ৪২ হাজার বাংলাদেশি এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন।
চলতি বছরের জুন মাস থেকে আবারও বাংলাদেশিদের সাধারণ শ্রমিক ভিসা, ভ্রমণে এসে ভিসা পরিবর্তন এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগও বন্ধ করে দেয় আমিরাত সরকার। কেবলমাত্র দুবাই শহরে উচ্চ শিক্ষিতদের জন্য স্কিল ভিসা চালু রাখা হয়৷ বাকি অঞ্চলগুলোতে ভিসা বন্ধ।
এখন যদি ভিসা জটিলতার সমাধান না হয় তাহলে অন্যান্য দেশের প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশীয় প্রতিষ্ঠানেও চাকরির সুযোগের স্থানটি ভিনদেশী নাগরিকদের দখলে চলে যাবে। এতে করে আমিরাতের শ্রমবাজার হারাতে বসবে বাংলাদেশ। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা রেমিট্যান্সের হারও ধিরে ধিরে কমে আসবে। তাই প্রবাসীরা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চান।