আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি ‘বহাল’ রাখতে পারে বাংলাদেশ

বিদ্যুতের দাম এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আপত্তি থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আদানি পাওয়ারের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনা অব্যাহত রাখবে অন্তবর্তীকালীন সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ এবং চুক্তি নিয়ে আইনি জটিলতার কারণে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে এখনই চুক্তি বাতিল করা হচ্ছে না।

বিষয়টির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিদ্যুতের মোট চাহিদার প্রায় এক–দশমাংশের জোগান আসছে প্রকল্পটি থেকে। তাই আদানির চুক্তি সরাসরি বাতিল করা কঠিন হবে।

সূত্র আরও বলেছে, ভুলত্রুটির শক্ত প্রমাণ ছাড়া আন্তর্জাতিক কোনো আদালতে এ চুক্তি নিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জ জানানো হলে, সেটিও সম্ভবত ব্যর্থ হবে।

আরেকটি সূত্র বলেছে, চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া যেহেতু সম্ভব না–ও হতে পারে, তাই পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে শুল্ক কমানোই হতে পারে একমাত্র সম্ভাব্য বিকল্প।

এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান রয়টার্সকে বলেন, ‘কমিটি বর্তমানে বিষয়টি পর্যালোচনা করছে এবং এ নিয়ে এখন মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’

২০১৭ সালের নভেম্বরে আদানি পাওয়ার লিমিটেডের ঝাড়খণ্ড ইউনিটের (এপিজেএল) সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ২৫ বছরের জন্য ১৪৯৬ মেগাওয়াট (নেট) বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর আওতায় এজেপিএলের গোড্ডা প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদিত শতভাগ বিদ্যুৎ কিনে নেবে বাংলাদেশ। সম্পূর্ণ আমদানি করা কয়লায় পরিচালিত এই ইউনিটকে ২০১৯ সালের মার্চ ভারত সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে।

২০২৩ সালের এপ্রিল-জুনে গোড্ডা প্ল্যান্ট সম্পূর্ণরূপে বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাংলাদেশের বেস লোডের ৭ থেকে ১০ শতাংশ সরবরাহ করে। হাসিনার পতনের পর আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা বিদ্যুৎ চুক্তিটি যাচাই-বাছাই করার কথা জানায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এমন পরিস্থিতিতে আদানি পাওয়ারের একজন মুখপাত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার আমাদের চুক্তিটি পর্যালোচনা করছে, এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। সত্যিকারের অংশীদারিত্বের মূল্যবোধ থেকে তাদের কাছে বিপুল পাওনা থাকা সত্ত্বেও আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছি’।

এছাড়া অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বরাবরে চিঠি লিখে তাদের পাওনা ৮০০ মিলিয়ন বা ৮০ কোটি ডলার মিটিয়ে দেওয়ার জন্য ‘হস্তক্ষেপ’ চায় আদানি পাওয়ার।