আওয়ামী লীগ দুর্নীতি করেনি, মানুষের কল্যাণে কাজ করেছে

বললেন প্রধানমন্ত্রী

এখনও পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  তিনি আবারও বলেছেন, দেশের উন্নয়নেই রিজার্ভের টাকা খরচ হয়েছে।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে রিজার্ভ, জ্বালানি, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি, গণতন্ত্রসহ নানান বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।  সকাল ১০টার পর তার সভাপতিত্বে গণভবনে এ বৈঠক শুরু হয়।  আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সিংহভাগ সদস্য বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে রিজার্ভের পরিমাণ ও এর খরচ নিয়ে বিরোধী দলগুলোর তোলা প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এখনও ৫ মাসের ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ আছে।  যারা বলেন রিজার্ভের টাকা কোথায় গেল, কেন খরচ হচ্ছে, তাদের বলছি- রিজার্ভের টাকা গেছে গম, ভুট্টা, ভোজ্যতেলসহ মানুষের খাদ্য কেনায়, সার কেনায়, মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জন্য।

তিনি বলেন, করোনার টিকা স্পেশাল বিমান পাঠিয়ে কিনে এনেছি।  চিকিৎসায় হাসপাতাল ডেডিকেটেড করেছি।  বিনা পয়সায় চিকিৎসা নিশ্চিত করেছি।  ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিবার থেকে আলাদা করে বাসা ভাড়া করে রেখেছি।  যেন তারা অসুস্থ না হয়, পরিবারও আক্রান্ত না হয়।  ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়ায় তাদের আলাদা করে একটা ভাতা দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র আছে বলেই বাংলাদেশে এত উন্নতি হয়েছে।  আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকে।  নির্বাচনে যতটুকু স্বচ্ছতা তা আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল।

‘আওয়ামী লীগ বিএনপির মতো দুর্নীতি করেনি। মানুষের কল্যাণে কাজ করেছে’—যোগ করেন তিনি।  তিনি আরও জানান, সাশ্রয়ের কারণে যেটুকু কষ্ট হয়েছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট আগামী মাসে কেটে যাবে।

সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার প্রভাব থেকে আমরা কিন্তু মুক্ত না।  এজন্য মিতব্যয়ী হতে হবে।  যে যার জমিটুকু কাজে লাগান।  ছাদ বাগানসহ নানাভাবে উৎপাদন করেন।  নিজেদের খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে পারলে দুর্ভিক্ষের আঁচ বাংলাদেশে লাগবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আমলে কী হতো তার জন্য বেশিদূর যেতে হবে না।  ২০০১ সালের নির্বাচন, মাগুরার নির্বাচন, মিরপুর-১০ নির্বাচনগুলো স্মরণ করলে হবে।  কথা ছিল (প্রচলিত) ১০ হোন্ডা, ২০ গুন্ডার নির্বাচন।  ভোটের সিল মারা থেকে শুরু করে নানান অপকর্ম হতো।  যার জন্য আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেছি।  ২০০৬ সালে নির্বাচন করার জন্য ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার লিস্ট করেছিল বিএনপি।

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, গুম-খুন হত্যার রাজনীতিতে তারা (বিএনপি) বিশ্বাস করে।  তাদের আমলে আব্দুর রহমান ও বাংলা ভাইরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।  সে সময় মানুষের চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছিল।  আমাদের বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।  হাওয়া ভবনের পাওনা না দিলে ব্যবসা করার সুযোগ ছিল না।  এই ছিল তাদের সময়ের অবস্থা।

‘সমালোচকরা সারাদিন কথা বলে, আবার বলে বাকস্বাধীনতা নেই।  ডিজিটাল বাংলাদেশ যদি না করতাম, আর এতগুলো টিভি-রেডিও না দিলে তারা কীভাবে কথা বলতো!  ফোন করলেও ১০ টাকা, ধরলেও। সেই ফোন সবার হাতে হাতে পৌঁছে দিয়েছি’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন, গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নসহ নানা ইস্যুতেও উপদেষ্টাদের সঙ্গে পরামর্শ করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি দল ও সরকারের নানা ইস্যুতেও উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলাপ করেন তিনি।