নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় দিনেদুপুরে আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়াকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পরিকল্পনাকারী আলাউদ্দিন হীরাসহ মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শনিবার (২৯ জুন) রাতে নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। রোববার (৩০ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাব-১১ সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ব্যাটেলিয়ান অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর নিহতের পরিবার মামলা করলে থানা পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের আভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার রাতে জেলা সদরের চর সৈয়দপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী আলাউদ্দিন হীরা (৩৫) কে গ্রেফতার করে। পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তি ও তথ্যমতে র্যাব-১১ ও র্যাব-১ একই রাতে যৌথ অভিযান চালিয়ে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার রতনপুর এলাকা থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আরও তিন আসামি আল আমিন (২২), রাসেল (২০) ও সানি (২৯) কে গ্রেফতার করে।র্যাব-১১ অধিনায়ক আরও জানান, গ্রেফতার ১ নম্বর আসামি আলাউদ্দিন হীরার বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি ও হত্যা চেষ্টাসহ দশটির বেশি মামলা এবং বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। ২ নম্বর আসামি আল আমিনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় পাঁচটি মাদক মামলাসহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চারটি জিডি রয়েছে। ৩ নম্বর আসামি রাসেলের বিরুদ্ধে একই থানায় দুটি মাদক মামলা রয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতাররা এই চার আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানিয়েছে। উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ জেলা সদরের ফতুল্লা থানার আলীপাড়া এলাকায় ইট বালু সিমেন্টসহ ইমারত নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিতে বাঁধা দেয়ায় কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সুরুজ মিয়ার সঙ্গে স্থানীয় সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন সালু ও তার ভাই আলাউদ্দিন হীরার মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে গত বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে স্থানীয় আলীপাড়া মসজিদে জোহর নামাজ আদায় করে বাড়ি ফেরার পথে হীরা ও সালুর নেতৃত্বে ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী সুরুজ মিয়াকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় সুরুজ মিয়াকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন তার দুই ছেলেসহ চারজন। ঘটনার পরদিন ২৮ জুন (শুক্রবার) নিহত সুরুজ মিয়ার ছেলে বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় গতকাল শনিবার দুজনকে গ্রেফতার করেছে ফতুল্লা থানা পুলিশ। নিহত সুরুজ মিয়া আলীপাড়া মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতিও ছিলেন।