অর্থপাচারকারীদের কোনো আদর্শ নেই

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক

অর্থপাচারের অভিযোগের মামলায় বিতর্কিত যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার জিকে শামীমের বিরুদ্ধে রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, অর্থপাচারকারীদের কোনো আদর্শ নেই।

সোমবার (১৭ জুলাই) রায় ঘোষণার সময় এমন মন্তব্য করেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি আসামিদের ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৪ টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। জরিমানার টাকা ৬০ দিনের পরিশোধ না করলে আরও এক বছরের কারাভোগ করতে হবে আসামিদের।

আদালত বলেন, অস্ত্রবাজ, টেন্ডারবাজ ও অর্থপাচারকারীদের কোনো আদর্শ নেই। তারা কোনো আদর্শকে লালন করে না। তবে আদর্শকে ব্যবহার করে রাতারাতিভাবে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়। তারা দেশ ও জাতির শত্রু। দেশের চলমান উন্নয়ন ও জাতীয় স্বার্থে তাদের সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করতে হবে।

এই মামলায় জিকে শামীমকে ১০ বছরের দণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি ৭ দেহরক্ষীর চার বছর করে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। চার বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. মোরাদ হোসেন, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহীদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন ও মো. আনিছুল ইসলাম।

এর আগে, গত ২৫ জুন এ মামলার রায় ঘোষণার কথা থাকলেও সেদিন আসামি পক্ষে অধিকতর যুক্তি উপস্থাপনের জন্য আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রায় স্থগিত রেখে অধিকতর যুক্তি উপস্থাপন ও রায় ঘোষণার জন্য আজ দিন ধার্য করেন।

২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সাত সশস্ত্র দেহরক্ষীসহ জি কে শামীমকে তার কার্যালয় থেকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এ সময় এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরের ডলার, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর, অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করা হয়।

এরপর জি কে শামীমের বিরুদ্ধে র‌্যাব বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। অস্ত্র আইনের মামলা নম্বর ২৮(০৯)১৯, অর্থ পাচার আইনের মামলা নম্বর ২৯(৯)১৯ ও মাদক আইনের মামলা নম্বর ৩০(৯)১৯।

তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৪ আগস্ট আদালতে জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচার আইনের মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু সাঈদ। ১০ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। মামলাটিতে চার্জশিটভুক্ত ২৬ সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

এমএইচএফ