মধ্যরাতে ক্যম্পাসে ছাত্রলীগের প্রবেশকে কেন্দ্র করে ৫ দফা দাবিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে। শনিবার (৩০ মার্চ) বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলনে নামে তারা।
এদিন বেলা ১১টায় অবস্থা ও ঘটনাপ্রবাহ অনুযায়ী পরিবর্তিত দাবি উপস্থাপন করে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আজকের মতো আন্দোলন স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনের অংশ হিসেবে আজ (শনিবার) ও ৩১ মার্চের টার্ম ফাইনালসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেছে তারা।
শিক্ষার্থীদের পরিবর্তিত দাবিগুলো হলো-
১. প্রশাসন ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের (ইমতিয়াজ রাব্বি) হলের সিট বাতিল করলেও তাকে একাডেমিক বহিস্কার করা হয়নি। আজ দুপুর ২টার মধ্যে তাকে একাডেমিক বহিস্কার করা।
২. ছবি ও ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে ছাত্রলীগের প্রবেশে সহায়তা করা একাংশের ছবি চিহ্নিত করেছেন বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা হলেন- বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এ এস এম আনাস ফেরদৌস, ইলেক্ট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মোহাম্মদ হাসিন আরমান নিহাল, অনিরুদ্ধ মজুমদার, সায়েম মাহমুদ সাজেদিন রিফাত এবং নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জাহিরুল ইসলাম ইমন।
৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ভাঙায় এই শিক্ষার্থীদেরও বুয়েট থেকে স্থায়ী একাডেমিক এবং হল থেকে বহিষ্কার করতে হবে এবং জড়িত অন্যদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
৪. বহিরাগতদের প্রবেশকারীদের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা মর্মে প্রশাসন থেকে লিখিত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া ও তা বাস্তবায়ন করা।
৫. দায়িত্ব পালনে অবহেলা করায় ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালকের পদত্যাগ, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া।
আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের আন্দোলনের পর ‘তথাকথিত’ রাজনৈতিক সংগঠনের কিছু ব্যক্তিরা ফেসবুকে পোস্ট করে আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছেন। আমরা তাদের এমন বক্তব্যের ধিক্কার জানাই।
তারা বলেন, আমরা সবসময়ই বুয়েটের নীতিমালায় থাকা ‘বুয়েটে সকল রকম ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ’ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমাদের দাবি কোনো বিশেষ ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে না। আমরা যেকোনো মূল্যে বুয়েটকে ছাত্ররাজনীতির হাত থেকে মুক্ত রাখতে বদ্ধ পরিকল্প।
তারা আরও বলেন, উপস্থিত শিক্ষার্থীদের গণস্বাক্ষর নিয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়েছি। এখনো আমাদের দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই আজকের মতো আন্দোলন স্থগিত করছি।
উল্লেখ্য, ২৮ মার্চ রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত ‘মহড়া’ দেন। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাকে সামনে রেখে ৫ দফা দাবিতে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে।
শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের প্রবেশে সহায়তা করায় ২৯ মার্চ বিকেলে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের হলের সিট বাতিল করে প্রশাসন।