হামলা করে আসামি ছিনতাই: উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৪৪ জনের নামে মামলা

আনোয়ারায় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের মামলার আসামি গ্রেপ্তার করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশ ওপর হামলা ও আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৪৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন পুলিশ।

মামলায় আনোয়ারা উপজেলার পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা কাজী মোজাম্মেল হকসহ অন্য আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী।

রোববার (৯ জুন) দুপুরে আনোয়ারা থানায় কর্ণফুলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) সোহানুর রহমান সোহাগ জানান, পুলিশের ওপর হামলা করে গুরুতর জখম, আসামি ছিনিয়ে নেওয়া, সরকারি গাড়ি ভাঙচুর এবং বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধাদান করার অভিযোগে ৪৪ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫০ থেকে ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

আনোয়ার  উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হককে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে। ছিনিয়ে নেওয়া আসামি মো. মোজাম্মেলকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে।

এর আগে শনিবার (৮ জুন) রাত ১১টার দিকে চাতরি-চৌমুহনী এলাকায় আনোয়ারায় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের মামলার আসামি গ্রেপ্তার করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশ উপর হামলা ও আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় আনোয়ারা ও কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের আনোয়ারা সেন্টার এলাকায় বাজেটকে স্বাগত জানানোর পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ান আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপ।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর বিভাগের উপকমিশনার শাকিলা সোলতানা জানান, শনিবার রাত ১১টার দিকে আনোয়ারায় টানেলের প্রবেশমুখে একটি রেস্টুরেন্টে মামলার এক নম্বর আসামি মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তার করতে যায় পুলিশ। আসামি মোজাম্মেলসহ একাধিক নেতাকর্মী অবস্থান করছিলেন। মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তার করতে গেলে নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। এ সময় নেতাকর্মীরা মিলে আসামি মোজাম্মেলকে ছিনিয়ে নেন। এর মধ্যে কয়েকশ নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত হন। পুলিশ সদস্যদের ঘিরে ধরে ধাক্কা দেন, গাছ দিয়ে আঘাত করেন এবং একপর্যায়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পাঁচ-ছয় রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির হোসেন জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশের ওপর হামলা হয়। ঘটনার পর আমরা সেখান থেকে চলে আসি। আমাকে এবং আনোয়ারার ওসিকে মেডিক্যালে নেওয়া হয়। তখন জানতে পারি, আবার হামলা হয়েছে। চৌমুহনী বাজার থেকে এসআরএফের (স্পেশাল রিজার্ভ ফোর্স) একটি গাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে সেটিতে হামলা ও ভাঙচুর করে। সেখানে আরও ৪-৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।