মো. মোজাহিদ (গাজীপুর):
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা শেষ হয়েছে ৫ জানুয়ারী (শুক্রবার) সকাল ৮ টায়। অথচ গাজীপুর-৩ আসনে গাজীপুর সদর উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ইকবাল হোসেন সবুজের পক্ষে ট্রাক প্রতীকের সমর্থকদের প্রচারণা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে ৫ তারিখ রাতে। প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি ভোটারদের মাঝে টাকা বিতরণ করারও অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার ৫ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের ভবানীপুর এলাকায় এই অভিযোগে দুইজনকে নগদ টাকা এবং ট্রাক প্রতীকের লিফলেট সহ আটক করেছেন স্থানীয় জনগণ। তারা জানান, শুক্রবার সকাল ৮ টা থেকে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালানো সম্পুর্ণ নিষেধ। যদি কেউ এই কাজ করে তাহলে নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘনের আওতায় পড়বে। অথচ ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে সন্ধ্যার পরে তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছিল ও ভোট কেনার উদ্দেশ্যে ভোটারদের মাঝে অবৈধ টাকা বিতরণ করছিল। এসময় স্থানীয়রা দুই জনকে আটক করে। এরমধ্যে একজন স্থানীয় মেম্বার। তার নাম শেখ মো. আবিদ হোসেন বাবুল। এসময় তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা এবং ট্রাক প্রতীকের লিফলেট পাওয়া গেছে।
প্রথমে খবরটি পেয়ে গাজীপুর সদর উপজেলার আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এরশাদ হোসেন নৌকা সমর্থিত কর্মীদেরকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে পাঠান, এবং নিজেও অল্পপর উপস্থিত হন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় মাহবুব আলম, তোতা মিয়া, খান মনির, এলাহি বক্স ও ইকবাল হোসেন প্রধান বলেন, আমরা খবর পাই ট্রাক প্রতীকের কর্মী ও ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বাবুল মেম্বার সন্ধ্যায় ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন এবং টাকা দিচ্ছেন। এই খবর পাওয়ার পর যুবলীগ নেতা এরশাদ হোসেন এর সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা কয়েক জন নৌকারকর্মী মিলে সেখানে যাই এবং তাদেরকে আটক করি। পরে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও ট্রাক প্রতীকের পক্ষে ভোটার স্লিপ উদ্ধার করি। তারা সেখান থেকে ছাত্রলীগ নেতা শাকিল ফকিরের সহায়তায় পালিয়ে যায়। আমরা সাথে সাথে জয়দেপুর থানায় খবর দিলে সেখানে পুলিশ আসে।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত বাবুল মেম্বারের কাছে জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়টি অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ এনে বলেন, আমি এবং এই এলাকার ডিশ ব্যবসায়ী আবু সাঈদ খান স্কুলের পাশে একটি চায়ের দোকানে বসে আলাপ আলোচনা করছিলাম। তার পাশের একটি টেইলার ব্যবসায়ী আমাদেরকে ডাক দেয় চা খাওয়ার জন্য। আমরা সেখানে বসে চা খাচ্ছিলাম। এর মধ্যে ঘটনাস্থলে আকস্মিক কয়েকজন এসে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ ক’রে। অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলে তারা আমারর ওপর ক্ষিপ্ত হয়। কেউ কেউ মারমুখী আচরণ করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের জানান, যেহেতু নির্বাচনের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের হাতে। ইতোমধ্যে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টি অবগত হয়েছেন। আমরা আমাদের তদন্ত রিপোর্ট জেলা প্রশাসককে পাঠাবো। তিনি যে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলবেন আমরা সেই মোতাবেক কাজ করব।