সাংবাদিকতার নামে রাজনীতি করা সমীচীন নয়: তথ্যমন্ত্রী

সাংবাদিকতার নামে রাজনীতি করা সমীচীন নয় উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে এবং স্বাধীনতা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।   আমরা মনে করি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিকাশ, গণতন্ত্রের বিকাশ জড়িত।  কিন্তু একইসঙ্গে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্বশীলতাও আছে।  স্বাধীনতার নামে যদি আমরা কেউ অপসাংবাদিকতা করি তাহলে দেশের আপামর জনগণ এবং সাংবাদিক সমাজ নিশ্চয় সেটিকে সমর্থন করে না।  সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার নামে রাজনীতি করা—সেটা যে সমীচীন নয় সেটিও নিশ্চয়ই আপনারা আমার সঙ্গে একমত হবেন।

শুক্রবার (৩১ মার্চ) সকালে নগরীতে নগরীর দেওয়ানজী পুকুরপাড়ের নিজ বাসায় সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এসময় প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের গ্রেপ্তার বিষয়ে আমেরিকাসহ ১২টি দেশ বিবৃতির বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১২টি দেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি তাঁদের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে।  ভারতের দিকে তাকানোর অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘সেখানে কয়েক দিন ধরে বিবিসির কার্যালয়ে তল্লাশি করা হয়েছে, সেখানে কি বিভিন্ন দেশ এ ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে? বিবৃতি দিয়েছে? দেওয়া হয়নি।  কারণ ভারত বড় দেশ, ভারতের শক্তি-সামর্থ্য বেশি, সে জন্য সেখানে সেই সাহস দেখাতে পারেনি।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কূটনীতিকদের সহায়তা কামনার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরাতো প্রথম থেকেই বলে আসছি তাঁরা জনগণের কাছে যায় না, তাঁরা বিদেশি কূটনীতিকদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে পদলেহন করে।  আমি আশা করেছিলাম, তাঁরা দুস্থ মানুষের সঙ্গে ইফতার করবে, সেটি না করে ফাইভ স্টার হোটেলে বসে কূটনীতিকদের সঙ্গে ইফতার করেছে।  সেখানে গিয়ে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য অনুনয়-বিনয় করেছে।’

তিনি বলেন, ‘কূটনীতিকদের আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো সমীচীন নয়।  প্রয়োজনে কূটনীতিকদের আচরণ সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশন তাঁদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে।  আসলে দোষটা কূটনীতিকদের চেয়েও আমাদের অনেকের অনেক বেশি।  কারণ আমরা গিয়ে তাঁদের হাতে-পায়ে ধরি একটু কিছু বলার জন্য। এটি আসলে দেশবিরোধী এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল।’

সাংবাদিকদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনাদের মনে আছে, যখন বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিল, তখন কিছু বড় পত্রিকায় ব্যানার হেডিং দিয়েছিল ‘পদ্মাসেতু আর হচ্ছে না’।  কিন্তু বাংলাদেশে পদ্মাসেতু হয়েছে নিজেদের টাকায়।’  এগুলোর ব্যাপারে সাংবাদিক বন্ধুদের সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সম্প্রতি ব্লুমবার্গ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, সেখানে তারা বলেছে, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং করোনার মধ্যেও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার কারণে আগামী নির্বাচনেও জননেত্রী শেখ হাসিনার জয়লাভের সম্ভাবনা এবং তিনি চতুর্থ মেয়াদের মতো নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।

ব্লুমবার্গ এটির কারণ উল্লেখ করেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেভাবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এসেছে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা যেভাবে তিনি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন, সে কারণেই চতুর্থবারের মতো তাঁর নির্বাচিত হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।  আজকে বিশ্বমন্দা পরিস্থিতির মধ্যে যেখানে ইউকে ও কন্টিনেন্টাল ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পণ্যের সংকট হয়েছে, আমাদের দেশে কোনো পণ্যেই সংকট হয়নি।’

এসময় নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।