যাকাতের অর্থে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের বহুমুখী সেবা কার্যক্রম

বিদেশি অনুদান নয়, দেশের মানুষের যাকাত ও অন্যান্য আর্থিক দানের ভিত্তিতে বহুমুখী সেবা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– মাতৃমঙ্গল কার্যক্রম, গৃহ নির্মাণ, হাফেজিয়া মাদ্রাসা, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের বিনামূল্যে রক্ত সরবরাহ, শীতবস্ত্র বিতরণ, স্বনির্ভরায়ন কার্যক্রম, চিকিৎসা সেবা, সুবিধাবঞ্চিতদের শিক্ষার আলো দেয়া ও প্রবীণসেবা ইত্যাদি।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন জানান, নিরাপদে সুস্থ সবল সন্তান প্রসবের জন্য মাতৃমঙ্গল কার্যক্রমের আওতায় সামর্থ্যহীন সন্তানসম্ভবা নারীদের স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি সরবরাহ করা হয়। ঢাকার মিরপুর, চট্টগ্রাম, বগুড়া ও বান্দরবানে এ পর্যন্ত ৪৪, ৮৯১ জন অস্বচ্ছল বা সামর্থ্যহীন প্রসূতি নারীকে সেবা দেয়া হয়েছে।

বান্দরবানের লামায় সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দুটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা। যার মধ্যে বালকদের জন্য ইমাম গাজ্জালী (র.) হাফেজিয়া মাদ্রাসা এবং বালিকাদের জন্য আর মুহাদ্দিসা আসমা (রা.) হাফেজিয়া মাদ্রাসা। এছাড়া একই স্থানে আছে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজ। যেখানে ২০০০ সাল থেকে লেখাপড়া করছে এতিম, সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা। ক্রমশ এর পরিসর বিস্তৃত হচ্ছে। এখানকার শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়ে পড়ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রায় ২৫০০ শিক্ষার্থী এখানে লেখাপড়া করছে।

ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সন্তানদের জন্যে পরিচালিত স্কুল ‘আদর্শ বিদ্যাপীঠ’ এর ব্যয়ভার বহন করছে কোয়ান্টাম। এ পর্যন্ত প্রায় ১৭৯৫ জন শিক্ষার্থীর পড়াশোনার খরচ দেয়া হয়েছে। সারাদেশে অস্বচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেয়া হচ্ছে শিক্ষাবৃত্তি। এ পর্যন্ত ২৪১৬ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দেয়া হয়েছে। গৃহনির্মাণ কার্যক্রমের আওতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্বলহীন ৩১৫৯টি পরিবারকে বাড়ি তৈরি করে দেয়া হয়েছে। থ্যালাসেমিয়া রোগীদেরকে নিয়মিত বিনামূল্যে বা স্বল্প প্রসেসিং খরচে সরবরাহ করা হয় রক্ত। শুধু ২০২৩ সালেই বিনামূল্যে ২,৯৭৮ ব্যাগ ও স্বল্পমূল্যে ১০,৬১৫ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে সারা দেশে শীতবস্ত্র ও অন্যান্য বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে এক লাখ ৬৭,৯১২টি।

স্বনির্ভরায়ন প্রকল্পের আওতায় স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করা হয়েছে ৩৫,০২০জন মানুষকে। ভ্যান, সেলাই মেশিন, অটো রিকশা, ছাগল কিনে দিয়ে আবার অনেকজনকে দোকান করে দিয়ে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করা হয়েছে।

বান্দরবানের লামা ও সদর উপজেলার রাজবিলায় রয়েছে প্রবীণ সেবা কার্যক্রম। বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দেয়া হয় অসহায় প্রবীণদের। দরিদ্র রোগীদের জন্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা এবং চক্ষুসেবা। এ পর্যন্ত ছয় লাখ ২৩,৬৭৩ জন দরিদ্র রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। ২৪২৯ জনের ছানি অপারেশনসহ চক্ষু চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে ১৭,৬২১ জনকে।

অনলাইনে যাকাতের অর্থ পাঠানোর সুযোগ আছে। এছাড়া সরাসরি কোয়ান্টামের যেকোন শাখা কার্যালয়ে কিংবা বিকাশ বা নগদ-এও দানের অর্থ পাঠানো যায়।