‘বড় মন্ত্রী হওয়া নয়, জনগণের ভালোবাসা পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ’
চট্টগ্রামে নেতা-কর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী
‘মন্ত্রী হওয়া নয়, রাজনীতিবিদদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জনগণের ভালোবাসা পাওয়া, গণমানুষের নেতা হওয়া, গণমানুষের এমপি হওয়া, আমি সেটিই হতে চাই’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত হবার পর মঙ্গলবার সকালে প্রথম চট্টগ্রাম এলে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বিমানবন্দরের বাইরে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ সময় দলীয় নেতাকর্মিদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হোন নতুন এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সংবর্ধনার জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমার গাড়ির সামনে কোনো একজন ভিখারিও হাত দেখালে, আমি কিন্তু দাঁড়াই। সেভাবেই থাকত চাই। একজন রাজনীতিবিদের সবচেয়ে পরম পাওয়া হচ্ছে জনগণের ভালোবাসা, বড় মন্ত্রী হওয়া নয়। গণমানুষের নেতা ও এমপি হওয়া একজন রাজনীতিবীদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য, আমি সেটিই হতে চাই।’
‘আমি গত ১৫ বছর ধরে চেষ্টা করেছি গণমানুষের এমপি হওয়ার জন্য। কে আমাকে ভোট দিয়েছে কিংবা দেয়নি, সেটি কখনো আমি বিবেচনায় রাখিনি। আমি প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সবসময়, কিন্তু সবমানুষের এমপি হয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমি এবারও নতুন অভিযাত্রায় সব মানুষের এমপি হিসেবে কাজ করতে চাই। যারা আমাকে ভোট দেয়নি কিংবা ভবিষ্যতেও দেবে না, তাদের জন্যও কাজ করতে চাই। অবশ্যই দল এবং নেতাকর্মীদের জন্যও কাজ করতে চাই। আমি আপনাদের ভাই হিসেবে আছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আজকে প্রথম আমি চট্টগ্রামের মাটিতে এসেছি উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম দিয়েই এদেশে ইসলাম প্রচার শুরু হয়েছে, আমি আল্লাহর কাছে এবং আপনাদের কাছে দোয়া চাই, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ভাইদের কাছে আশীর্বাদ চাই, যাতে করে এই দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে পারি এবং দেশের মান-মর্যাদা আরও উজ্জ্বল করতে পারি, পূর্ব-পশ্চিম সব দেশের সাথে সম্পর্কের আরও উন্নয়ন ও ঘনিষ্ঠ করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
নিজ নির্বাচনী এলাকার সবাই অত্যন্ত কষ্ট করেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি গত ১৫ বছর ধরে চেষ্টা করেছি গণমানুষের এমপি হওয়ার জন্য। কে আমাকে ভোট দিয়েছে কিংবা দেয়নি, সেটি কখনো আমি বিবেচনায় রাখিনি। আমি প্রার্থী হিসেবে সবসময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী, কিন্তু সবমানুষের এমপি হয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমি এবারও নতুন অভিযাত্রায় সব মানুষের এমপি হিসেবে কাজ করতে চাই।
সাংবাদিকদেরকে তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন যে আন্তর্জাতিকভাবে মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে গ্রহণ করেছে, সেটির প্রমাণ হচ্ছে বহু নির্বাচনী পর্যবেক্ষক বাংলাদেশে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনডিআই, আইআরআই, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সার্ক, ওআইসি ও কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর পর্যবেক্ষক থেকে শুরু করে অন্যান্য বিভিন্ন সংস্থার পর্যবেক্ষকরা বাংলাদেশে এসেছে। তারা সবাই একযোগে মতপ্রকাশ করেছে, বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম সহিংসতা হয়েছে। এটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার।
‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অবজারভার তথ্য-উপাত্তের জন্য নির্বাচন কমিশনে গেছেন’ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের বিদেশি বন্ধুদের আমাদের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ আছে, সেজন্য নির্বাচন কমিশনে গিয়েছেন। আমি আজকে কাগজে দেখলাম, নির্বাচন কমিশন যে তথ্য উপাত্ত দিয়েছে, এতে তারা সন্তুষ্ট হয়েছে। দেখুন, জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেশিরভাগ নিবন্ধিত দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে।
এ সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর নগর সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম ও শেখ আতাউর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু ও সাবেক সাংসদ নোমান আল মাহমুদ প্রমূখ।