সপ্তাহ দেড়েক আগে নেপালের সাবেক অধিনায়ক সন্দ্বীপ লামিচানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন কাঠমান্ডু জেলা আদালত। আজ (বুধবার) তাকে ওই মামলায় আট বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে তিন লাখ নেপালি রুপি জরিমানা এবং ভুক্তভোগী কিশোরীকে আরও দুই লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
কাঠমান্ডু আদালতের বিচারক শিশির রাজ ধাকালের সিঙ্গেল বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন। আদালতের ইনফরমেশন অফিসার চন্দ্র প্রসাদ পান্থির বরাত দিয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট।
গত ২৯ ডিসেম্বর আদালতের বেঞ্চ জানিয়েছিলেন, দেশটির সাবেক অধিনায়ক লামিচানের বিরুদ্ধে ২৬ বছর বয়সী গুশালাকে (ছদ্মনাম) ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের ২১ আগস্ট তিলগঙ্গা হোটেলে ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের ওঠে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার পর আদালত রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন। একইসঙ্গে জানিয়ে দেন, ধর্ষণের সময় নাবালিকা ছিলেন না ভুক্তভোগী।
এর আগে প্রথম দফায় গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই লামিচানে জানিয়েছিলেন, তিনি পুলিশের সঙ্গে সবরকম সহযোগিতা করতে রাজি। আইনি পথেই বিষয়টি দেখে নিতে চান। একইসঙ্গে উল্লেখ করেন যে তিনি চক্রান্তের শিকার। পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর নেপাল ক্রিকেট দলের হয়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বকাপ লিগ ২-তে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেন লামিচানে। তবে সেখানে বিপক্ষ দল নামিবিয়া এবং স্কটল্যান্ডের কোনো ক্রিকেটার তার সঙ্গে হাত মেলাননি। পরবর্তীতে তাকে আরেকটি ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে বাদ দেয় নেপাল। যদিও এক ক্রিকেটার চোট পাওয়ায় তাকে ফের দলে নেওয়া হয়। এরপর বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনকারী ম্যাচ খেলেন লামিছানে। ডানহাতি এই লেগস্পিনার শেষবার দেশের হয়ে নেমেছিলেন আগস্টে। ওই সময় কেনিয়ার বিপক্ষে তিনি একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় ২৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে। এরপরই তাকে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করে নেপাল ক্রিকেট বোর্ড (সিএএন)। অবশ্য পরবর্তীতে ১৫ হাজার ৩০০ ডলারের বিনিময়ে তাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়া হলেও চূড়ান্ত রায়ের আগে তার দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পরে অবশ্য সেই বাধাও পার হয়ে দেশের বাইরে খেলেছেন লামিচানে।
২০১৮ সালে অভিষেকের পর ৫১টি ওয়ানডে ও ৫২টি-টোয়েন্টি খেলেছেন লামিচানে। সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার উইকেট সংখ্যা ২১০টি। তাছাড়া অভিযুক্ত হওয়ার আগে বিশ্বের প্রায় সব বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টেই তিনি ছিলেন নিয়মিত মুখ। আইপিএল, বিপিএল, বিগ ব্যাশ, পিএসএল ও সিপিএলে তাকে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতে দেখা যেত।