এখন মূল চ্যালেঞ্জ, কেন্দ্রে বেশিসংখ্যক ভোটার উপস্থিত করা

নির্বাচনের আর হাতেগণা কয়েকদিন বাকি। এরই মধ্যে জমে উঠেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যদিও নির্বাচনে ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করাটাই। বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্যতম বিরোধী দল বিএনপিবিহীন নির্বাচনে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ করবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে ক্ষমতাসীনরা। তবে দলটির নেতাদের ভাষ্যমতে- বিএনপিবিহীন নির্বাচনে উৎসবমুখর ভোটগ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাদের দাবি- এখন পর্যন্ত নির্বাচনের ভালো পরিবেশ আছে। মানুষ ভোট কেন্দ্রে যাবে এবং নিজেদের ভোটার অধিকার প্রয়োগ করবেন। আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে কেন্দ্রে বেশিসংখ্যক ভোটার উপস্থিত করাকেই মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য সংসদ নির্বাচন দেখতে চায় বহির্বিশ্বের দেশগুলো। এজন্য নির্বাচনের পরিবেশ পরিস্থিতির উপর বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে তাদের পক্ষ থেকে। এমন অবস্থায় যদি ভোটার উপস্থিতি আশানুরূপ না হয়Ñ তাহলে বড় ধরনের চাপে পড়তে হবে আওয়ামী লীগকে। এটা মাথায় রেখে কাজ করছেন নেতারা।

বিশ্লেষকরা বলেন, ‘টানা তিন মেয়াদ ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সামনে চতুর্থবার ক্ষমতায় যাওয়ার হাতছানি। অন্যতম বিরোধী শক্তি বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচনে না আসায় আওয়ামী লীগের আবার ক্ষমতায় ফেরা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে বিরোধীদের বর্জনের নির্বাচন যেন দেশে-বিদেশে কিছুটা হলেও গ্রহণযোগ্যতা পায় সেটাই এখন ক্ষমতাসীনদের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৌশল হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট প্রার্থীদের নৌকা প্রতীক দিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এতে মাঠ পর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার একটা আমেজ চলে এসেছে। প্রায় অর্ধেক আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে স্বতন্ত্র বা অন্য দলের প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তবে অনেক আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকা এবং বিরোধী শিবিরের ভোট ঠেকানোর আন্দোলন ও প্রচারণার মুখে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোই এখন আওয়ামী লীগের সামনে মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
বিশ্লেষকরা বলেন, বিএনপিবিহীন নির্বাচনে দলের কোনো প্রার্থী যেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত না হয়, সে বিষয়ে শুরু থেকেই হার্ডলাইনে ছিল আওয়ামী লীগ। এজন্যই দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। বরং নির্বাচন করতে তাদের উৎসাহ দেয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দলীয় কোন্দল, সংঘাত, সহিংসতা ও দ্বন্দ্বের বিষয়টি উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। তবে এদের কারণে নির্বাচনী যুদ্ধটা জমে গেছে।

একটা বিষয় আজ সাধারণ মানুষের কাছে স্পষ্ট যে, সরকার এবার নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করার জন্য দৃঢ়ভাবে প্রচেষ্টা চালাবে। কেননা, তাদের জয়-পরাজয় নিয়ে তেমন ভাবতে হচ্ছে না। দলের প্রার্থী না জিতলেও স্বতন্ত্র হিসেবে যিনি জিতে আসবেন, তিনিও মূলত তাঁদের মানুষ। অতএব এবিষয়ে তাদের কোনো দুশ্চিন্তা নেই।

কোনো প্রকার জালভোট, পেশিশক্তির ব্যবহার করে কেন্দ্র দখলের মাধ্যমে ভোট আদায়, অর্থ দিয়ে ভোটার প্রলুব্ধ করে ভোট আদায় ইত্যাদি অপকৌশলকে অনেকে পছন্দ করেন না। তাই ভোটারদের নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে ভোট দিতে প্রশাসনের পাশাপাশি সকলকে সহযোগিতা করতে হবে। ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের নির্বিঘ্নে যাতায়াত ও তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করতে হবে।