আদালতে কাঁদলেন বাবুল আক্তার, যা বললেন শ্বশুর মোশাররফ হোসেন

আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বলেন, সে (বাবুল আক্তার) স্ত্রী মাহমুদা খানমকে খুনের জন্য আগেও বেশ কয়েকবার পরিকল্পনা করেছিলেন। এ জন্য মে তার সোর্স কামরুল শিকদার ওরফে মুসার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।

মঙ্গলবার (২ মে) বিকেলে তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ জসীম উদ্দিনের আদালতে দ্বিতীয় দফায় সাক্ষ্য দেওয়ার সময় বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন। সাক্ষ্য শেষ হওয়ার পর আসামিপক্ষের আইনজীবী তাকে আংশিক জেরা করেন। আদালত জেরা মুলতবি রেখে ৮ মে পরবর্তী দিন ধার্য করেন। এর আগে গত ৯ এপ্রিল এই মামলায় মোশাররফ হোসেনের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।

এ সময় মোশাররফ হোসেন আদালতকে বলেন, বাবুলের সঙ্গে এক নারীর সম্পর্ক রয়েছে বিষয়টি জানার পর আমার মেয়ের ওপর বাবুলের অত্যাচার আরও বৃদ্ধি পায়। এ জন্য বাবুল আমার মেয়েকে খুনের পরিকল্পনা করে। খুন করতে বাবুল তার সোর্স কামরুল শিকদার মুসাকে কাজে লাগায়। মুসা প্রায়ই বাবুলের বাসায় আসা–যাওয়া করত। অস্ত্র কেনার জন্য বাবুল তাকে ৭০ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন। ঘটনার আগে বাবুল চীনে যান। তখনো মুসাকে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন মাহমুদাকে খুন করতে।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হওয়ার পর বাবুলের আইনজীবীরা মোশাররফকে জেরা করেন। বাবুলের আইনজীবী গোলাম মাওলা গণমাধ্যমকে বলেন, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বাবুলকে এই মামলায় ফাঁসানোর জন্য সাক্ষ্যে অনেক কাহিনি সাজিয়েছেন তার শ্বশুর। জেরায় এসব কাহিনি খণ্ডন করা হচ্ছে।

এদিকে শ্বশুরের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হওয়ার পর আদালতে আসামির কাঠগড়ায় থাকা বাবুল আদালতের কাছে মৌখিক অভিযোগ করে জানান, তার মামলার ধার্য করার দিনে সাদা পোশাকধারী পিবিআই কর্মকর্তারা এখানে ঘোরাফেরা করেন। তারা মামলার তথ্য নিতে এখানে আসেন।

ওই সময় আদালত বলেন, মামলার সাক্ষী ছাড়া যে কেউ আদালতে আসতে পারেন। উন্মুক্ত এজলাসেও আসেন অনেকে নানা দাপ্তরিক কাজে।

এদিন আদালতে আরেকটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। দুপুরে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বাবুলকে আদালতে হাজির করা হয়। ওই সময় তার বর্তমান স্ত্রী ও দুই সন্তানও আসে। তারা বাবুলের সঙ্গে কথাও বলে।

আদালত সূত্র জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার সময় আদালতে উপস্থিত হন বাবুল আক্তারের বর্তমান স্ত্রী মুক্তা এবং দুই সন্তান মাহির ও টাপুর। স্ত্রী-সন্তানরা আদালত কক্ষে বাবুল আক্তারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কোর্ট পুলিশ বাঁধা দেয়। এ সময় বাবুল আক্তার স্ত্রী সন্তানদের সাথে কথা বলতে আদালতের অনুমতি চান। পরে আদালত অনুমতি দেন। এ সময় তিনি সন্তানদের জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করেন।