পবিত্র রমজানের শুরু থেকেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরমের প্রকোপ, এর সঙ্গে বাড়ছে লোডশেডিংও। গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি হওয়া সত্ত্বেও এতো বেশি লোডশেডিং অসহ্য ও বিরক্তিকর। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামে চাহিদার বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। চট্টগ্রামে এখন গড়ে বিদ্যুতের চাহিদা ১১৮০ থেকে ১২০০ মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ১৫০০ মেগাওয়াটেরও বেশি। কিন্তু তারপরও চট্টগ্রামে লোডশেডিং করা হচ্ছে। জানা গেছে, এই রমজানে ইফতার ও সেহেরির সময় ঢাকায় কোথাও লোডশেডিং নেই। ঢাকায় লোডশেডিং করা হচ্ছে না। অথচ চট্টগ্রামে লোডশেডিং করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে চট্টগ্রামের চাহিদার অতিরিক্ত ৩৩৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। তারপরও ১৬ মার্চ চট্টগ্রামে ১৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল বলে পিডিবির সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের কাছ থেকে জানা গেছে।
পিডিবি চট্টগ্রামের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) এর দপ্তর থেকে প্রতিদিনের উৎপাদন তালিকায় দেখা গেছে, গত ১৪ মার্চ চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলোতে ১৬৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। আর এদিন চট্টগ্রামের চাহিদা ছিল মাত্র ১১০৮ মেগাওয়াট। রমজানে চট্টগ্রামের চাহিদার বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তারপরও চট্টগ্রামে লোডশেডিংয়ে রেখে সাড়ে ৪০০ থেকে প্রায় ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য মতে, বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে উৎপাদন সক্ষমতার কোনো ঘাটতি নেই। তবে ঘাটতি আছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা, এলএনজি ও জ্বালানি তেলের সরবরাহে। চাহিদা মতো জ্বালানি না পাওয়ায় গেল দু’বছর গ্রীষ্ম মৌসুমে ব্যাপক লোডশেডিংয়ে ভুগতে হয়েছে গ্রাহককে। এবার গ্রীষ্ম মৌসুমে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার মেগাওয়াট। গত বছরের চেয়ে চাহিদা বেড়েছে ১১ শতাংশের মতো। একই সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতাও বেড়েছে একই হারে। তবে গত বছরের মতোই সক্ষমতার বড় একটি অংশ বসিয়ে রাখতে হতে পারে জ্বালানির অভাবে।
আসলে রমজানে গ্রাহকদেরকে স্বস্তিতে রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে। প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে গ্রাহকদের। গরম ও সেচের কথা চিন্তা করে সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা মোতাবেক উৎপাদন পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এতো উদ্যোগ সফল হলো না। গ্রাহকরা ঠিকই ভুগছেন লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায়। পবিত্র রমজান মাসে অনেক কিছুতেই অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে হবে। এরমধ্যে বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ অন্যতম। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেলে যেমন তার ব্যবস্থা নিতে হবে সাথে সাথে, তেমনি লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে হবে। এই মাসে ঘন ঘন লোডশেডিং কোনোভাবেই কাম্য নয়।