সিলগালা ‘হলে’ বহাল তবিয়তে ছাত্রলীগ, নির্বিকার চ.বি প্রশাষণ

কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের এমন আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পাশাপাশি হল ত্যাগের নির্দেশের ও সিলগালা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এ আদেশ যেন শুধুই সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপরেই লাঘব হয়। কারণ কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে হল গুলোতে অবস্থান করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বেশকিছু নেতাকর্মী।

অভিযোগ রয়েছে, এ বিষয়ে অবগত থাকার পরেও নীরব ভূমিকা পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

নিয়ম অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পর হলের প্রতিটি কক্ষ সিলগালা করা হয়। ছাত্রী হল গুলো শিক্ষার্থীশূন্য হলেও ছাত্রদের শাহজালাল হল, শাহ আমানত হল, এ এফ রহমান, আলাওল ও সোহরাওয়ার্দী হলের বিভিন্ন কক্ষে থাকছেন বেশকিছু ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

জানা যায়, ৬টি ছাত্র হলের ১৮৭টি কক্ষের সিলগালা ভেঙে ফেলেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরমধ্যে শাহ আমানত হলে ৩০টি, সোহরাওয়ার্দী হলে ৩৫টি, শাহজালাল হলে ৪২টি, এ এফ রহমান হলে ১৫টি, আলাওল হলে ২৫টি ও আব্দুর রব হলে ৪০টি কক্ষ রয়েছে।

এসব কক্ষে শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয়, মির্জা খবির সাদাফ, সাদেক হোসেন টিপু, যুগ্ম সম্পাদক সাহেদুল ইসলাম সাঈদ ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থ প্রতিম বড়–য়া সহ প্রায় দেড় শতাধিক নেতাকর্মী অবস্থান করছেন।

আগে দিনের বেলা আনাগোনা কম থাকলেও রাতের আঁধারে হলের পিছনের দেয়াল টপকে হলে প্রবেশ করতেন নেতাকর্মীরা। তবে বর্তমানে দিনের বেলাতেও বেড়েছে তাদের চলাচল। এ ব্যপারে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি নন হল কর্মকর্তারা।

এর আগে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে গত ১৮ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া হয় আবাসিক হলগুলোও। দেশের এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ হল বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অনেকের বাড়ি দূর-দূরান্তে হওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত হলে থাকার অনুমতি চান। এ আবেদনে সাড়া না দিয়ে, উল্টো পুলিশের সহায়তায় তাদের হল থেকে বের করে দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা হল ছাড়লেও ছাত্রলীগের হল না ছাড়ার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা রয়েছে বলে অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম দেশ বর্তমানকে বলেন, সাংবাদিকদের কাছ থেকে এমন খবর পেয়ে আমি জমিনে হল পরিদশন করি। তবে কাউকেই আমরা খুঁজে পাইনি।

তিনি আরও বলেন, আলাওয়াল ও এ.এফ রহমান হলের অবকাঠামো বেশ পুরনো ও দূর্বল হওয়ায় হলের পেছন দিয়ে কিছু ছাত্র হলে প্রবেশের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে তাদের দূর্বৃত্ব আক্ষা দিয়ে হল প্রভোস্টরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।