নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে দোকান ভাঙচুর ও মালামাল লুট করে জোরপূর্বক জমি দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ভূমিদস্যু ও কথিত বিএনপি নেতা ও তার ছেলের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই ভূমিদস্যুর নাম গোলাম রাব্বানি (৭০) এবং তার ছেলে রুবেল মিয়া (৪৫)।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ৭টায় মিজমিজি ধনুহাজী রোড এলাকায় রাজিয়া সুলতানা নামক এক নারীর পৈতৃক সম্পত্তির উপর থাবা দেন এই অভিযুক্তরা। প্রায় ৫ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি এবং ৭০ হাজার টাকার মালামাল লুট হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী।
এদিন সকাল ১১টায় ভুক্তভোগী রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে অভিযুক্ত পিতা-পুত্রের নাম উল্লেখের পাশাপাশি তাদের ১৫/২০ জন অজ্ঞাত সহযোগীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত গোলাম রাব্বানি সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকার মৃত হাজী তোরাব আলীর ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গোলাম রাব্বানী ও তার ছেলে রুবেল মিয়ার নির্দেশে ১৫-২০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র লোহার রড, ধারালো ছোড়া, চাপাতি, কোদাল, এসএস পাইপ, হামার নিয়ে ধনুহাজী রোড এলাকায় রাজিয়া সুলতানার জমির উপর নির্মিত তিনটি দোকান ভাঙ্গচুর করে লুটপাট চালায়। পরবর্তীতে লোক মারফতে ভুক্তভোগীসহ তার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে অভিযুক্তরা তাদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ এবং প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে।
দোকানগুলো ভাঙ্গার কাজে নিয়োজিত ইব্রাহিমের স্বীকারোক্তি মোতাবেক, গোলাম রাব্বানী টাকার বিনিময়ে তাঁকে দোকান ভাঙ্গার নির্দেশ দিয়েছেন। রাব্বানীর কথা অনুযায়ী সে লোকজন নিয়ে তা ভেঙে ফেলে।
তিনি আরও বলেন, তাঁকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি ফোন দিয়ে দোকান ভাঙ্গার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে ওসিকে গোলাম রাব্বানীর নির্দেশে এ কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।
এলাকাবাসী জানান, গত ৫ আগস্টের পর হতে রাব্বানী নিজেকে বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন। কিছুসংখ্যক মাদক কারবারির মাধ্যমে নিজের নিজের একটি গ্রুপ তৈরি করে মানুষের উপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তবে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে ঐ ব্যক্তি বিএনপির কোনো পদে নেই। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির নেতৃত্বে থাকা কোনো নেতা তাঁকে চেনেন না।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, ভাঙচুরের ঘটনাটি আমি শুনেছি এবং একজন আমার কাছে স্বীকার করেছেন, রাব্বানীর নির্দেশে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ভুক্তভোগী সকালে অভিযোগ দায়ের করেছে। আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষীদের কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।