মাছ-মাংস জুটছে না সাধারণের ভাগ্যে। সংসারের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সুস্থ জীবন ধারণের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ আমিষ জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হচ্ছে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারকে। দিনদিন লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। নেই নিয়মিত বাজার তদারকি। মাঝেমধ্যে ভোক্তা অধিদপ্তরের লোক দেখানো অভিযানে সুফল পাচ্ছে না ভোক্তারা।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমান বয়লার মুরগির কেজি ১৭৫ থেকে ১৮৫ টাকা। মোটা চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন ১৬৫ থেকে ১৬৭ টাকা, ডাল (মোটা) ১০৫ থেকে ১১০ টাকা, রুই মাছ ২৭০ থেকে ৩৫০ টাকা। ডিম(হালি) ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা, আলু ৫৫ টাকা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গেল তিন বছরে রীতিমতো লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে মুদ্রাস্ফীতি। ২০২১ সালের পাঁচ দশমিক পাঁচ শতাংশ গড় মুদ্রাস্ফীতি পরের বছর দুই দশমিক দুই শতাংশ বেড়ে দাড়ায় সাত দশমিক সাত শতাংশে।
২০২৩ সালে আরও এক দশমিক আট শতাংশ বেড়ে নয় দশমিক পাঁচ শতাংশে দাড়ায় গড় মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতির ক্রমাগত উর্ধ্বগতির প্রভাব পড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের উপর।
আগস্টেই দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। টিসিবির বাজার দর বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঠিক পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোটা চাল, সয়াবিন তেল, আলু, ডাল, ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও রুই মাছের দাম গড়ে অর্ধেকের বেশি (৫৪ দশমিক ৭২ শতাংশ) বেড়েছে।
এরমধ্যে মোটা চালের ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ, সয়াবিন তেলের ৫১ দশমিক ৮১ শতাংশ, আলুর ১২০ শতাংশ, ডালের ৮৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ডিমের (হালি) ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ব্রয়লার মুরগির ২৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং রুই মাছের দাম ২৫ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ৪১টি শ্রম খাতের শ্রমিকদের মাসিক মজুরি ৫২১ টাকা থেকে ১৭ হাজার ৯০০ টাকা পর্যন্ত। তবে এর প্রায় দুই তৃতীয়াংশ খাতের শ্রমিকদের মজুরি ১০ হাজার টাকার কম।
অন্যদিকে, দেশে গেল কয়েক বছরে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতির চাপে দৈনন্দিন ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকেই। একদিকে দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্ধ্বগতি অন্যদিকে অপর্যাপ্ত মজুরি- এই দুয়ের আকাশ-পাতাল ফারাকে নাভিশ্বাস নিম্নআয়ের মানুষের।